কবিতা- ব্লাকআউট

ব্লাকআউট
-অতীশ দীপঙ্কর

 

 

এমন অসহ্য দিন বেশীক্ষণ থাকে না–
অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকবে না বলে
পাল্লা দিয়েছে হাওয়া মুষ্টিবদ্ধ হাতে দৌড় লাগিয়ে।
মনে রাখব এসব স্বপ্নভূক দিনগুলোর কথা;
হয়তো পেরিয়ে যাবে মানুষের এ জন্ম!
কথা উঠেছে নানা ভাবে–
মানুষ কিন্তু চিনে রাখছে এই বিগত জন্ম।
এখন যা, তা আমাদের নিজস্ব শব্দ,
নিজস্ব ভাষা শৈলীর প্রবাহে খুব চনমনে;
পায়ে পায়ে তাল ঠুকে নাচছে উদাত্ত কন্ঠে গেয়ে।
অন্ধকার থাকে না বলেই থাকবে না-
এমন বিষম অন্ধকার শিয়রে এসে খানিক দাঁড়িয়ে পড়ে।
খেলনা পুতুল আর নিয়ম ভাঙার খেলা উপস্থিত,
আজকাল চারিদিকে শুনতে পাই–
অপসৃত আলোর সন্ধানে খুঁজে তোলপাড় করছে মরুপথে;
ঝরে পড়া বেদনা কুড়িয়ে নিয়ে বেদুইন!
কোন কারো সাধ্যি থাকবে না আর-
ছড়িয়ে পড়ছে অজানা বাতাসের সাথে
নিঃশর্ত আলিঙ্গনের মগ্নতায় ভেসে ভেসে।
কাঁঠাল জামরুল পাতায় পাতায় ব্লাকআউটের ধ্বনি,
সবুজের দেশে অন্য উচ্চারণ!
দেহ ভেদ করে ঢুকছে নগ্ন কারিগর!
হলুদ হলুদ সরষে ফুলের পরাগেও অচেনা আঁধার!
পাতায় পাতায় সবুজ মুছে যায়!
রাতের আগন্তুক উচ্চস্বরে চমকে দিচ্ছে হাজারো মন!
আঁধারেও বৃষ্টি নামছে তেপান্তরের মাঠে-
এখানে কেউ কেউ বিভোর, হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে!
তীব্র যন্ত্রণায় কেঁপে কেঁপে
জ্বলন্ত আগুন লাগা বুকে পথে পথে দৌড়ে বেড়াচ্ছে!
গল্প শুনতে শুনতে মানুষের জীবনে রাত্রি নেমে এসেছে!
ভুলেছে কবিতারাও আলো হাতে পাশে এসে দাঁড়াতে!
সেই কবে থেকে তারা তেমনি আছে
শুধু মানুষের গল্পগুলো যাচ্ছে পাল্টে!
আমরা সকলে মরে গেছি এমনটা নয়;
নিয়ত নতুন নতুন দৃশ্যের জন্ম হচ্ছে,
ঘোড়ারা স্বপ্ন দেখার হিম্মত হারিয়ে
কেবলই ঘাস খায় এ আঁধার রাতে।
বোধহয় তাম্রলিপ্ত যুগ পেরিয়ে আদিম যুগের আগের কোন সময়ে-
ঘোড়ারা ঘাসের লোভে এখনো চড়ে বেড়াচ্ছে।

Loading

Leave A Comment